শুভ দিনের প্রত্যাশায় শুভ কামনা!

ছোট বেলা থেকেই একটা কথা শুনে আসছি যে “দেশ এখন এক মহা ক্রান্তিকাল পার করছে। এখন দরকার একজন সাহসী নেতার।” কিন্তু দেশ এখনো সাহসী নেতার দেখা পেল না। তখন যারা দেশের দেখাশোনা করার কাজ করতেন এখনো তারাই করে। নেতৃত্ব পরিবর্তন হয়নি আর দেশের ভাগ্যও পরিবর্তন হয় নি। অনেক পরিবর্তন আসলেও শান্তি আসে নি। একটার পর একটা খবর পুরো দেশ কে নাড়িয়ে দিচ্ছে। সেই ক্রান্তিকাল আর শেষ হল না। তবে ক্রান্তিকাল শেষ না হলেও শেষ হয়েছে আরেকটি বাংলা বছর। গতকাল ছিল বাংলা ১৪২১ সালের চৈত্র সংক্রান্তি । চৈত্র সংক্রান্তি কাটিয়ে আজকে আমরা শুরু করেছি আরেকটা বাংলা বছর ১৪২২।

গতকাল থেকেই ফেসবুক হোম পেজে নববর্ষের শুভেচ্ছা, শুভকামনা, আর নতুন বছরকে বরন করার প্রস্তুতির ছবি দিয়ে ভরপুর। সবার আনন্দ আর প্রস্তুতি দেখে বেশ ভালই লাগছিল। তবে কিছু কিছু হঠাৎ বাঙ্গালীকেও দেখালাম। সারা বছর জুড়ে বিদেশী ভাষা আর বিদেশী সংস্কৃতি নিয়ে পড়ে থাকে আর ১লা বৈশাখ আসলেই পান্তা ইলিশ, লাল সাদা শাড়ি বা পাঞ্জাবি নিয়ে মাতামাতি শুরু করে। ভাব দেখে মনে হয় তারাই খাঁটি বাঙ্গালি। ১লা বৈশাখের অনুষ্ঠান শেষ করে রাতে ফেসবুকে কিছু দামি ক্যামেরায় তোলা ছবি পোস্ট করে স্ট্যাটাস দেয় “আজকে একটা রকিং ডে পার করলাম”। আমরা এরকম একদিনের বাঙ্গালী চাই না। চাই মনে প্রানে বাঙ্গালী। চাই সারা বছর জুড়ে বাঙ্গালী।

গতকাল রাতে ফেসবুকের হোমপেজে সবার আনন্দ আর প্রস্তুতি দেখে ইচ্ছে হচ্ছিল সারা বছর জুড়ে সবাই যদি এমন মিলেমিশে থাকতে পারতাম তাহলে খারাপ হত না। সবাই মিলেমিশে থাকতে পারব কিনা জানি না তবে আশা করতে তো দোষ নেই। এমন একটা সময় আশা করি যেখানে রাজনৈতিক সহিংসতায় কেউ প্রান হারাবে না। আস্তিক নাস্তিক নিয়ে মাতামাতি হবে না। সবাই নিজের ধর্ম আর বিশ্বাস নিয়ে নিজের মত থাকুক। কেউ কাউকে খোঁচাতে যাবে না। ধর্মের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ উন্মাদনা আর প্রতিহিংসায় মেতে উঠবে না। পারস্পরিক সম্পর্ক আর ভালবাসায় দেশ শান্তি আর উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে। দেশ তার ক্রান্তিকাল অতিক্রম করবে। এই শুভ দিনের প্রত্যাশা করে সবার জন্য রইল শুভকামনা। আর সব বাঙ্গালীদের জানাই বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ ১৪২২।

23.81033290.412518

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.